১০ দেশের রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন এরদোয়ান

যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, নেদারল্যান্ডসসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। 

কারাবন্দি এক নেতার মুক্তি দাবি করায় স্থানীয় সময় গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি এই ১০ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে গতকাল সোমবার (২৫ অক্টোবর) নিজের সেই অবস্থান থেকে সামান্য সরে এসেছেন তিনি।

গতকাল দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার কূটনৈতিক আচার–নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এরপরই এরদোয়ান তার অবস্থান থেকে সরে এলেন। 

রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ বা অবাঞ্ছিত দূতের নোটিস জারি করেছিলেন এরদোয়ান। পার্সোনা নন গ্রাটা কথাটি তিনি সরিয়ে নিয়েছেন। কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতকে পার্সোনা নন গ্রাটা ঘোষণা করার অর্থ, এরপর তাকে সে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিধান দেয়া হবে। সাধারণত এই নোটিস জারি হলে রাষ্ট্রদূত নিজেই দেশে ফিরে যান। 

এরদোয়ান বলেছিলেন, দশ দেশের রাষ্ট্রদূত তুরস্কে অবাঞ্ছিত। কূটনীতিকদের অনেকেই মনে করেছিলেন, এরপর ওই রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে যেতে বলা হবে। কিন্তু সোমবার তিনি জানিয়েছেন, আপাতত ওই রাষ্ট্রদূতদের ফিরে যেতে হবে না। তাদের উপর জারি করা নোটিস ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

প্রশ্ন উঠছে, কেন নিজের অবস্থান বদল করলেন এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, ওই ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত নিজেদের অবস্থান বদল করেছেন। সে কারণেই তিনি কিছুটা নরম হয়েছেন। তুরস্কের দাবি, ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত একটি নতুন বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে তারা বলেছেন, তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা মন্তব্য করতে চান না। বস্তুত, আন্তর্জাতিক কূটনীতির নীতি অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রদূত সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন না। ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত তা স্বীকার করেছেন। এরপরেই বরফ কিছুটা গলেছে বলে তুরস্কের প্রশাসনের দাবি। ওই বিবৃতির পরেই এরদোয়ান পার্সোনা নন গ্রাটার নোটিস তুলে নেন।

গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব শেষে এরদোয়ান টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বক্তৃতায় বলেন, সংকট সৃষ্টি করা কখনোই আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের অধিকার, আইন, সুনাম ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) একই দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে নতুন একটি বিবৃতিতে আমাদের দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে এমন অপবাদ দেয়া থেকে এক ধাপ পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এ রাষ্ট্রদূতেরা তুরস্কের সার্বভৌম অধিকার সম্পর্কে তাদের বিবৃতির ব্যাপারে আরও সতর্ক হবেন।’

তুরস্কের জেলে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি মানবাধিকার কর্মী ওসমান কাভালা। তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি জারি করেছিলেন ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত। তারপরেই বিতর্কের শুরু।

 বিক্ষোভে অর্থায়ন ও একটি অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার বছর আগে আটক হন কাভালা। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। -ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //